- Trade News 24 - http://www.tradenews24.com -

ক্যাপিটাল মার্কেটে মুনাফার সুযোগ আছে, ঝুঁকিও রয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা

শেয়ারবাজার থেকে সবসময় মুনাফা আসবে এমন ধারণা ভুল। এটিকে যদি নিয়মিত আয়ের স্থায়ী উৎস মনে করা হয় তবে তা বিনিয়োগকারীদের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। ক্যাপিটাল মার্কেটে যেমন মুনাফার সুযোগ আছে, তেমনি ক্ষতির ঝুঁকিও রয়েছে। তাই বিনিয়োগকারীদের সচেতন হতে হবে যে শেয়ার ও বন্ড কেনা মানে কখনো কখনো ক্ষতিও ভাগ করে নেওয়া।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের বন্ড ও সুকুক বাজার উন্মোচন : রাজস্ব ক্ষেত্র, অবকাঠামো সরবরাহ এবং ইসলামী মানি মার্কেট উন্নয়ন’ শীর্ষক সেমিনারে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে ক্যাপিটাল মার্কেট এখনও উন্নত হয়নি। সরকারি বন্ড সেগমেন্ট থাকলেও সেখানে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ খুবই কম, আর শেয়ারবাজার প্রায় নগণ্য। ফলে অর্থায়নের ক্ষেত্রে বড় প্রকল্পগুলো ঝুঁকি ভাগাভাগি না করে কেবল ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল হচ্ছে। এতে ঋণখেলাপি ও তহবিল অপব্যবহারের ঘটনা ঘটছে, যা দেশের জন্য বড় ট্র্যাজেডি। অথচ প্রকৃতপক্ষে ঝুঁকি ভাগাভাগি করতে হলে মানুষকে বন্ড, ডিবেঞ্চার ও শেয়ারে বিনিয়োগ করতে হবে। ব্যাংক থেকে শুধু ঋণ নেওয়া এবং পরে তা ভুল খাতে ব্যবহার করা কোনো সমাধান নয়। তাই ক্যাপিটাল মার্কেটে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এবং বিনিয়োগকারীদেরও বুঝতে হবে যে এখানে ঝুঁকি যেমন আছে, তেমনি লভ্যাংশ বা মুনাফার সম্ভাবনাও আছে।

তিনি আরও বলেন, সুকুক বাজারে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকার বন্ড রয়েছে, তবে সেগুলো শিক্ষা ও স্যানিটেশন খাতে ব্যবহৃত হওয়ায় আয়ের হার কম। এসব বন্ড বেসরকারি খাতের উৎপাদনমুখী প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হলে লাভবান হওয়া যেত এবং ব্যাংকের ওপর চাপও কমত। সুকুক অবশ্যই প্রকৃত সম্পদভিত্তিক হতে হবে, যাতে বিনিয়োগকারীর আস্থা তৈরি হয়।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে এখনো সিকিউরিটাইজেশন কার্যকর হয়নি। অথচ মেট্রোরেলসহ বড় প্রকল্পগুলোতে এ প্রক্রিয়া ব্যবহার করলে বিশ্বব্যাংকের ঋণ নির্ভরতা কমানো যেত। এছাড়া পেনশন ফান্ড ও গ্র্যাচুইটি ফান্ড ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে, কারণ এগুলো সরকারি দায়বদ্ধতা।

তিনি বলেন, শুধু মূলধন ও সুকুক বাজার নয়, বীমা বাজারের উন্নয়নেও নজর দেওয়া জরুরি। একই সঙ্গে কর কাঠামো ও প্রণোদনা সংস্কার করে বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন অর্থ মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ প্রমুখ।