প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ: পুঁজিবাজারে আসছে বহুজাতিক কোম্পানির সরকারি শেয়ার

সময়: শনিবার, আগস্ট ২, ২০২৫ ২:৪৮:০৭ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্দেশনা অনুযায়ী পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা, তারল্য প্রবাহ ও ভিত শক্তিশালী করে বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই ধরাবাহিকতায় শিল্প মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এবং ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে, যাতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতে সরকারের এবং বিদেশি অংশীদারদের ধারণ করা শেয়ার দ্রুত পুঁজিবাজারে ছাড়াতে পারে।

গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে শিল্পসচিব ওবায়দুর রহমানের সভাপতিত্বে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় দেশের শেয়ারবাজারকে শক্তিশালী ও সম্প্রসারিত করার অংশ হিসেবে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

বৈঠকের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনার আওতায় যেসব কোম্পানিতে সরকারের শেয়ার রয়েছে, সেগুলোর কমপক্ষে ৫ শতাংশ শেয়ার এবং বিদেশি মালিকানাধীন শেয়ারের সমপরিমাণ অংশ শেয়ারবাজারে অফলোড করা হবে। এই যুগান্তকারী পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হলো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়িয়ে বাজারের পরিধি বিস্তৃত করা এবং সার্বিকভাবে বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করা, যা দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রাশিদুল হাসান ও নুরুজ্জামান, যুগ্ম সচিব সাজেদুর রহমান এবং উপসচিব নুরুন্নাহার সহ শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, ইউনিলিভার বাংলাদেশ, নুভিস্টা ফার্মা, সানোফি বাংলাদেশ, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, রেকিট বেনকিজার (বাংলাদেশ), দ্য বেঙ্গল গ্লাস ওয়ার্কস, মিরপুর সিরামিক ওয়ার্কস, হিমাদ্রি লিমিটেড এবং কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানিসহ বেশ কিছু সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির নির্বাহীগণ উপস্থিত ছিলেন।

আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ এবং আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের সিইও মাজেদা খাতুনও আলোচনায় অংশ নেন। বিসিআইসি-এর চেয়ারম্যান এবং বিএসআরবি-এর মহাপরিচালকও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের অভ্যন্তরীণ একটি সূত্র জানিয়েছে, সরকার বিশেষ করে উচ্চ-পারফর্মিং বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মানসম্মত শেয়ার বাজারে আনার উপর জোর দিচ্ছে, যেখানে সরকারের এখনও অংশীদারিত্ব রয়েছে। এর মাধ্যমে মূলধনের ভিত্তি আরও প্রশস্ত হবে, বাজারের তারল্য বাড়বে এবং বিনিয়োগকারীরা মৌলিকভাবে শক্তিশালী কোম্পানিতে বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন।

বৈঠকে অংশীজনরা শেয়ার অফলোডিং নীতি বাস্তবায়নের জন্য কোম্পানিগুলোর প্রস্তুতি এবং শেয়ার অফলোড করার সহজ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেন। যাতে এই শেয়ারগুলো সহজেই সেকেন্ডারি বাজারে তালিকাভুক্ত করা যায় এবং কোম্পানিগুলোর ফ্লোটিং শেয়ার বাড়ানো যায়।

Print This Post