রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

সময়: মঙ্গলবার, আগস্ট ১২, ২০২৫ ১০:৩০:২৩ পূর্বাহ্ণ

জেলা প্রতিনিধি:

পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে চরগুলো ডুবতে শুরু করেছে। চরবাসী গবাদি পশু ও মালপত্র নিয়ে লোকালয়ে ফিরে এসেছেন।

সোমবার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় রাজশাহী পয়েন্টে সীমান্তে পদ্মার পানি ছিল ১৭ দশমিক ৩৯ মিটার। আর রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানির বিপৎসীমা ১৮ দশমিক শূন্য ০৫ মিটার। ফলে বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মার পানি। গেল ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী পয়েন্টে পানি বেড়েছে দশমিক ১৭ মিটার।

এদিকে, পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে টি-বাঁধ পরিদর্শন বন্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সরে যেতে বলেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আর পদ্মার পানি বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৬৬ মিটার নীচ দিয়ে পদ্মার পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী পয়েন্টে রোববার (১০ আগস্ট) সকাল ৬টায় পদ্মা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৭ দশমিক ১৩ মিটার। একই দিন সন্ধ্যা ছয় টায় পানির উচ্চতা ছিল ১৭ দশমিক ২২ মিটার। সোমবার (১১ আগস্ট) সকাল ৬টায় পানি বেড়ে হয়েছে ১৭ দশমিক ৩২ মিটার। আর একই দিন সন্ধ্যা ৬টায় পানির উচ্চতা দাঁড়ায় ১৭ দশমিক ৩৯ মিটার।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই থেকে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। সেদিন পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৩৫ মিটার। তারপর আবার তা কমে যায়। আবার একই মাসের ৩১ জুলাই থেকে পানি বাড়তে থাকে। তার পর থেকে পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে চর এলাকার প্লাবিত হয়েছে। ফলে চর থেকে গবাদিপশু লোকালয়ে নিয়ে আসছেন চরের বাসিন্দারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সদর উপজেলার নারায়ণপুর ও আলাতলি ইউনিয়নের ১ হাজার ১০০ পরিবার পানিবন্দী। শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের ২ হাজার, উজিরপুর ইউনিয়নের ৪৫০ ও দূর্লভপুর ইউনিয়নের ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দী জীবন যাপন করছে।

সোমবার সকালে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পার্শ্ববর্তী তালাইমারী, বাজে কাজলা ও পঞ্চবটি এলাকার শিক্ষার্থীরা পানির মাড়িয়ে হেঁটে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে।

চর খিদিরপুরের বাসিন্দা করীম বলেন, পদ্মা পানি বেড়েছে। জেগে উঠা চরগুলো ডুবে গেছে। ফলে চরের বেশিরভাগ মানুষ লোকালয়ে চলে এসেছেন। এছাড়া গবাদি পশুগুলো নদী থেকে লোকালয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। ফলে এক ধরনের গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।

এক চরের বাসিন্দা বলেন, প্রতিদিন বাড়ছে পদ্মার পানি। সারাদিন চরের মানুষ তাদের মালামাল নৌকায় করে লোকালয়ে নিয়ে আসছে। এই পাশে অনেকে তাদের আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে রাখছেন। কেউ কেউ ভাড়া বাড়িতে উঠছেন। তবে যাদের গবাদি পশু রয়েছে। তারা পড়ছেন বিপাকে। এমন পরিস্থিতিতে এখনো অনেক গবাদি পশু চরে রয়েছে। সেগুলো নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

রাজশাহী পবা উপজেলার ৮ নম্বর হরিয়ান ইউনিয়নের মেম্বার বলেন, পদ্মা নদীর পানিতে অনেক চর ডুবে গেছে। অনেকের বাড়ির কাছা কাছি পানি উঠে গেছে। অনেকেই চর ছেড়ে লোকালয়ে চলে গেছে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে গবাদি পশুর নিয়ে। অনেকেই গবাদি পশু লোকালয়ে নিয়ে গেছে। এখনও অনেক গবাদি পশু চরে রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার এনামুল হক বলেন, রাজশাহীতে পদ্মার বিপৎসীমা ১৮ দশমিক ০৫ মিটার। সোমবার সন্ধ্যায় পানির উচ্চতা ছিল ১৭ দশমিক ৩৯ মিটার।

Print This Post