চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষ

সময়: রবিবার, আগস্ট ৩১, ২০২৫ ৮:৪২:০৭ পূর্বাহ্ণ

ক্যাম্পাস প্রতিবেদক:

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের এক ছাত্রীকে মারধরের পর এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে ২০ জনের অধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের কাছে একটি ভবনে ভাড়া থাকেন। শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে তিনি ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে এক পর্যায়ে ভবনের দারোয়ান তাকে মারধর করেন। এ সময় ২ নম্বর গেটে থাকা শিক্ষার্থীরা দারোয়ানকে ধরতে গেলে তিনি পালিয়ে যান। শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া করলে স্থানীয়রা ইট–পাটকেল মারা শুরু করেন। তখন সংঘর্ষ ও পালটাপালটি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী দর্শন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সময় মতো বাসায় আসি। আজকেও দেরি করিনি। ১২টার মধ্যে চলে আসি। দারোয়ানকে দরজা খুলতে বললে তিনি খুলছিলেন না। পরে জোরে ডাক দিলে তিনি অকথ্য ভাষায় কথা বলেন। আমি জবাব দিতে গেলে হঠাৎ আমার গলায় চড় মারেন। সঙ্গে সঙ্গে আমার রুমমেটরা নামলে তিনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং লাথি মারতে থাকেন। আমি আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে আমার রুমমেট ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন।’

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, স্থানীয়দের হামলায় ২০ জনের অধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতা আল মাসনূন রয়েছেন। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে৷ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক সাব্বির হোসেন বলেছেন, মাসনূনকে কোপানো হয়েছে।

এ ছাড়া আহত ব্যক্তিদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রয়েছেন। তাকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হলে চিকিৎসক মোহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, ‘আমার কাছে একজন শিক্ষার্থী আসেন। তার ভাষ্যমতে চোখের নিচে ঘুষি লাগার কারণে রক্তপাত হচ্ছিল। তিনি চশমা পরেন। এজন্য হয়তো ওই জায়গায় গভীর ক্ষত হয়েছে। ক্ষতস্থানে তিনটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. কোরবান আলী এবং সহকারী প্রক্টর নাজমুল হোসাইনের সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে রাত পৌনে ১টার দিকে উপস্থিত হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় দুই নম্বর রাস্তায় ঢুকতে পারেননি তারা। পুরোটা স্থানীয়দের দখলে ছিল। পরে রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আসেন।

এর আগে মধ্যরাত সোয়া ৩টার দিকে সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাসে নেই। তবে যতটুক জানতে পারলাম সহকারী প্রক্টর নাজমুল এবং কোরবান স্যার—দুজনই আহত হয়েছেন। ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা রওনা দিয়েছে।’

Print This Post