রাজধানীতে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে মধু মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সময়: সোমবার, সেপ্টেম্বর ১, ২০২৫ ৮:০৩:১৯ পূর্বাহ্ণ

রাজধানীতে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী ‘মধু মেলা’। মৌ চাষ উন্নয়ন এবং জনসাধারণের মধ্যে মধুর উপকারিতা ও গুরুত্ব তুলে ধরতে প্রথমবারের মতো এ মেলার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত বিসিকের প্রধান কার্যালয়ে এ মেলা গতকাল রোববার উদ্বোধন করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিল্পসচিব মো. ওবায়দুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিসিকের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম।

মধু মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মৌচাষিদের ৩০টি স্টল রয়েছে। পাঁচ দিনব্যাপী এ মেলা চলবে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে।

বিসিকের হিসাবে দেশে বর্তমানে প্রতিবছর ৭ হাজার ৫৪৬ টন মধু উৎপাদিত হয়। সুন্দরবন, মধুপুর গড়, শেরপুর, টাঙ্গাইল, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মৌ চাষের মাধ্যমে মধু উৎপাদিত হয়। প্রাচীনকাল থেকে মানুষের খাদ্য ও ঔষধি উপাদান হিসেবে মধু ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবেও মধু উৎপাদন ও বিক্রি বেড়েছে।

মেলার উদ্বোধন শেষে ‘বাংলাদেশের মৌ চাষ উন্নয়নে বিসিকের কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মেলার নাম শুনে থাকি, যার আয়োজন করা হয় গ্রামগঞ্জে বা অন্যান্য জায়গায়। তবে মধু মেলার ধারণা একেবারেই নতুন।’

অনুষ্ঠানে শিল্পসচিব ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘আমাদের চিনির বিকল্প হিসেবে প্রাকৃতিক মধু খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ভেজাল মধু ও চিনি মিশ্রিত মধু কারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন। তিনি বলেন, মৌ-বাক্স ব্যবহার, উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ ও সরকারি সহায়তার ফলে বর্তমানে মধু একটি সম্ভাবনাময় শিল্পে পরিণত হয়েছে। এই খাত পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে।

অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন মধুচাষি ও ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন। মধু চাষের উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান ন্যাচারোর প্রতিষ্ঠাতা মো. আল আমিন বলেন, মধুর মান ঠিক রাখতে ও মৌয়ালদের জীবন উন্নত করতে যথাযথ পারিশ্রমিক নির্ধারণ করতে হবে।

মৌচাষিদের পক্ষ থেকে আফজাল হোসেন বলেন, মধুর উন্নয়নে ফুড গ্রেডের কনটেইনার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন। পাশাপাশি ভেজাল মধু বিক্রেতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া মৌচাষিদের সাহায্য করার জন্য কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।

 

Print This Post
নিউজটি ৭২ বার পড়া হয়েছে ।