বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জাতিসংঘ সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ঢাকাস্থ আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস।
রোববার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচন, গণতন্ত্র ও দেশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন গোয়েন লুইস।
গোয়েন লুইস সাংবাদিকদের বলেন, আগামী নির্বাচনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে কারিগরি সহায়তা দেওয়া হবে।
লুইস আশা করেন আগামী সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের সব দল যুক্ত (অংশগ্রহণ করবেন) হবে বলে আশা করেন। বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করা খুবই চ্যালেঞ্জিং বলেও উল্লেখ করেন লুইস।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঢাকাস্থ জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী হিসেবে গোয়েন লুইস মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এরপর তিনি অন্য দেশে চলে যাবেন। তার বিদায় উপলক্ষ্যে বৈঠক হয়েছে।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে যে আলোচনা রয়েছে সেটা কীভাবে সফল করা যায় তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট, নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা দীর্ঘ আলোচনা করেছি। আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল বাংলাদেশে ডেমোক্রেটিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে ইউএন এর যে একটা কমিটমেন্ট এবং ডেমোক্রেটিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে গেলে যে গণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড চর্চা, একে অপরের প্রতি কি ধরনের সম্পর্ক থাকা উচিত তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে সেই প্রেক্ষাপটে আমরা মনে করি গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনার জন্য আজকে সবাই মিলে কাজ করতে হবে। এ মুহূর্তে জনগণের সবচেয়ে বড় চাহিদা হচ্ছে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে গেলে খুব সহসা একটা নির্বাচনের মাধ্যমে সে কাজটা করতে হবে। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে যে নির্বাচনের আলোচনা চলছে, এটাকে কীভাবে সফলভাবে আমরা সমাপ্তি করতে পারি সেটা আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন এবং রোহিঙ্গারা ওখানে যে মানবেতর জীবন যাপন করছে এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের সহায়তার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার এবং বিদেশিদের সঙ্গে একযোগে আগামী দিনে কীভাবে কাজ করা হবে, তাদের যতদিন তারা প্রত্যাবর্তন করা না যায়, ততদিন তাদের বিষয়ে জাতিসংঘের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। এটাকে আমরা কীভাবে আরো উন্নততর করতে পারি, ভালোভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি…।
বিএনপির এই নেতা গোয়েন লুইস সম্পর্কে আরও বলেন, বিগত দিনে স্বৈরাচার বিরোধী যে আন্দোলন, সংগ্রাম হয়েছে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে, গণতন্ত্রের পক্ষে, মানবাধিকারের পক্ষে ওর (গোয়েন লুইস) যে অবদান সেটার আমরা স্বীকৃতি দিতে চাই। অত্যন্ত কঠিন সময়ে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ওর যে ভূমিকা ছিল এজন্য তার প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছি। সে জাতিসংঘের চার্টার অনুযায়ী প্রত্যেকটি দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, মানবাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সে সাহসী ভূমিকা পালন করেছে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারপার্সনের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক বিশেষ সহযোগী উপদেষ্টা কমিটি সদস্য শামা ওবায়েদ।
