- Trade News 24 - https://www.tradenews24.com -

প্রস্তাবিত মার্জিন ঋণ বিধিমালা নিয়ে অস্বস্তি

প্রস্তাবিত মার্জিন ঋণ বিধিমালা নিয়ে অস্বস্তিতে মার্জিন ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এ বিধিমালা কার্যকর হলে অধিকাংশ শেয়ারই
‘নন-মার্জিন’ বা মার্জিন ঋণ অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে বলে এ অস্বস্তি। প্রতিষ্ঠানগুলো মনে করছে, এ কারণে তাদের ঋণের ব্যবসা কমে
যাবে। অন্যদিকে বিদ্যমান মার্জিন ঋণে কেনা শেয়ারগুলো সমন্বয় করতে হলে বাজার দীর্ঘ মন্দায় পড়ার শঙ্কা আছে।

প্রসঙ্গত, শেয়ারবাজার সংস্কারের অংশ হিসেবে সংস্কার টাস্কফোর্সের প্রস্তাব মেনে বিদ্যমান মার্জিন ঋণ বিধিমালা বাদ দিয়ে নতুন বিধিমালা
প্রণয়নের প্রস্তাব করেছে বিএসইসি, যা গত মঙ্গলবার জনমত যাচাইয়ের জন্য প্রকাশ করা হয়েছে।

এমন প্রেক্ষাপটে গতকাল বুধবার দেশের তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর হারিয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে তালিকাভুক্ত
৩৬০ কোম্পানির মধ্যে ১১৯টির দর বাড়ার বিপরীতে ২০০টি দর হারিয়েছে, অপরিবর্তিত ছিল ৩৮টির দর। বেশির ভাগ শেয়ারদর হারানোয়
প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩১ পয়েন্ট হারিয়ে ৫৩৭৯ পয়েন্টে নেমেছে। একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা বলেছেন, বুধবারের দরপতনের
নেপথ্যে মার্জিন ঋণ বিধিমালা প্রস্তাব দায়ী বলে অনেকে মনে করছেন।

বিধিমালার খসড়াটি প্রকাশের আগেই ১০ লাখ টাকার কম বিনিয়োগ নিয়ে মার্জিন ঋণ নেওয়ার প্রাথমিক খসড়া তৈরি করেছিল বিএসইসি। এ
খবর প্রচার হলে শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। ফলে কমিশন আগের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসে ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেও মার্জিন ঋণ
নেওয়ার সুযোগ রেখেছে।

এদিকে নতুন বিধিমালায় বিনিয়োগের সময় মার্জিনযোগ্য শেয়ার পরে মার্জিন-অযোগ্য হয়ে পড়লে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে বিক্রির বাধ্যবাধকতা
আরোপ করার কথা বলা হয়েছে। এতে ওই শেয়ারে বড় বিক্রির চাপ তৈরি করবে, সংশ্লিষ্ট শেয়ারকে দরপতনে ঠেলে দেবে– এমন শঙ্কার কথা
জানিয়েছেন বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা।

জানতে চাইলে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের সিইও সাফফাত রেজা গনমাধ্যমকে জানান, কমিশনের প্রস্তাবিত মার্জিন ঋণ বিধিমালাটি পর্যালোচনা করছেন। তিনি বলেন, মার্জিন ঋণ হলো গ্রাহক ও প্রতিষ্ঠানের সমঝোতার বিষয়। এটি অনেক আইন দিয়ে বেঁধে দেওয়া ঠিক নয়। প্রতিষ্ঠান যদি ঝুঁকি না মনে করে, আইন দিয়ে তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করা উচিত নয়। বিশ্বের বহু দেশে এটি গ্রাহক-প্রতিষ্ঠানের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। এমনকি শ্রীলঙ্কার মতো শেয়ারবাজারে এর নীতিমালা শিথিল।

মার্জিনযোগ্য শেয়ার মার্জিন-অযোগ্য হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, প্রস্তাব করা হয়েছে, কোনো শেয়ার মার্জিন-অযোগ্য হয়ে পড়লে পরের পাঁচ
কর্মদিবসের মধ্যে তা বাধ্যতামূলকভাবে বিক্রি করে সমন্বয় করতে হবে। এর মধ্যে মার্জিন ঋণ সমন্বয় করতে হলে যে বিক্রির চাপ আসবে,
তাতে ওই শেয়ার ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়বে। ফলে এ বিধান কার্যকর করা যাবে না, আবার দরপতনও বন্ধ হবে না।

এক্ষেত্রে লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহীর পরামর্শ হলো–এমন বিধান না রাখা। গ্রাহক যদি ঝুঁকি নিতে চায়, তাহলে তার
পোর্টফোলিওতে রাখার অনুমতি থাকা উচিত। অন্যথায় বিক্রি করে সমন্বয় করার জন্য ছয় মাস বা এক বছর সময় দেওয়া উচিত। এর বাইরে
‘ফোর্স-সেল’ বিধান তো থাকছেই।

প্রস্তাবিত বিধিমালায় ব্যাংকের চেক বা পে-অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফট দিয়ে মার্জিন প্রদান করলে তা নগদায়ন নিশ্চিত না করে মার্জিন ঋণ না
দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করার কথা বলা হয়েছে।