জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
পুঁজিবাজারের সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজ হ্যাক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের (ট্রেক নম্বর- ০৭৪) সার্বিক কার্যক্রম তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমে অসঙ্গতি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন বিএসইসিতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ব্রোকারেজ হাউজটির বিরুদ্ধে ফয়জুর রহমান চৌধুরী নামের একজন গ্রাহক অভিযোগ এনেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি আদেশ বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন থেকে জারি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বিএসইসির জারি করা আদেশ হ্যাক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে।
গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, সহকারী পরিচালক মো. মারুফ হাসান এবং মো. আশরাফ হাসান।
বিগত সরকারের আমলে আইন লঙ্ঘন করা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি থাকা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মনে করে, পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে হ্যাক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে ফয়েজুর রহমান চৌধুরী নামের একজন গ্রাহকের আনিত অভিযোগ তদন্ত করা প্রয়োজন।
এ কারণে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২১ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩-এর ধারা ১৭(ক) এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন উল্লিখিত তিন কর্মকর্তাকে ব্রোকারেজ হাউজটির বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য নিয়োগ দিয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তারা এই আদেশ জারির তারিখ থেকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করবেন এবং কমিশনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবেন।
সূত্রে জানা গেছে, ব্রোকারেজ হাউজটির যেসব বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা খতিয়ে দেখা হতে পারে সেগুলো হলো- মার্জিন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, নেগেটিভ ইক্যুইটিসহ বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, নেতিবাচক ইক্যুইটি কেন বাড়ছে ও এর জন্য কারা দায়ী, নেতিবাচক ইক্যুইটির পরিমাণ, প্রভিশনস বা মার্জিন অ্যাকাউন্টের বিপরীতে রক্ষিত তহবিল, প্রভিশনসের ঘাটতি, মার্জিন অ্যাকাউন্টে অননুমোদিত লেনদেনসহ বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্য কোনো প্রাসঙ্গিক সমস্যা থাকেলে, সেটাও চিহ্নিত করবে তদন্ত কমিটি।
হ্যাক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ৫২ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে পুঁজিবাজারে বিমা খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। ২০২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের (আরজেএসসি) মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির এসব শেয়ার প্রভাতি ইন্স্যুরেন্সের নামে স্থানান্তর হয়। এর আগে, একই বছরের ১ মার্চ দুই কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ক্রয় সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।