নিজস্ব প্রতিবেদক:
বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহে তীব্র মন্দা চলছে। ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে ব্যাপকভাবে। গত জুন মাসে প্রবৃদ্ধি রেকর্ড ৬.৪০ শতাংশে নেমে আসে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এতটা কম ঋণ প্রবৃদ্ধি আর দেখা যায়নি। এ নিয়ে চলতি বছর দু’মাস ঋণ প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের নিচে নেমেছেঠ। এছাড়া কোনো মাসেই বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ ছুঁতে পারেনি, ৭ শতাংশের আশ-পাশে ঘুরপাক খেয়েছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, সংঘাতময় পরিবেশ, আইনশৃঙ্খলার ব্যাঘাত ইত্যাদি কারণে উদ্যাক্তারা নতুন বিনিয়োগের ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। অবশ্য ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার পেছনে ব্যাংকিং খাতেরও ভূমিকা আছে কিছুটা। বিগত বছরগুলোতে ব্যাপক লুটতরাজের কারণে অনেক ব্যাংকেই তারল্য সঙ্কট চলছে, কমে গেছে ঋণ দেওয়ার সক্ষমতা। অন্যদিকে ব্যাংকগুলো বিপুল খেলাপী ঋণের চাপের কারণে ঋণ প্রদানে এখন অনেক বেশি সতর্ক।
বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার বিষয়টি আগামী দিনে অর্থনীতিতে বেশ বড় সঙ্কটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ক্রমাগত হ্রাস ব্যাংকিং খাত এবং বৃহত্তর ব্যবসায়িক পরিবেশ উভয় ক্ষেত্রেই ক্রমবর্ধমান সংকটের দিকে ইঙ্গিত করছে। ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে নতুন শিল্প স্থাপন ও ব্যবসা সম্প্রসারণ কম হচ্ছে, একইভাবে কম তৈরি হচ্ছে কর্মসংস্থানের সুযোগ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মাসিক তথ্য দেখায় যে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পেয়েছে — মে মাসে ৭.১৭ শতাংশ, এপ্রিলে ৭.৫ শতাংশ, মার্চে ৭.৫৭ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে ৬.৮২ শতাংশ, জানুয়ারিতে ৭.১৫ শতাংশ এবং ডিসেম্বর ২০২৪ সালে ৭.২৮ শতাংশ।
জাতীয় নির্বাচনের আগে পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। যদি কোনো কারণে দেশে জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে যায়, তাতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশি পণ্যের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক শুল্ক আরোপের ইস্যুটির গ্রহণযোগ্য সমাধান না হলে, সেটিও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।