নিজস্ব প্রতিবেদক:
অবৈধ লেনদেন, অর্থপাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুঁজিবাজারের সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউজ ও এনআরবি ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এনআরবি ব্যাংক সিকিউরিটিজ পিএলসির (ট্রেক নম্বর-২৬৬) সার্বিক কার্যক্রম তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে বেশ কিছু নির্দেশনা সাপেক্ষে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
সম্প্রতি বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
তদন্তের বিষয়ে এনআরবি ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে।
গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন-বিএসইসির উপ-পরিচালক মোহাম্মদ এমদাদুল হক, সহকারী পরিচালক মিঠুন চন্দ্র নাথ এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইকরাম হোসেন।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মনে করে, পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে উল্লেখিত শর্তাবলী অনুসারে এনআরবি ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের কার্যক্রম তদন্ত করা প্রয়োজন।
তাই সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২১, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩-এর ধারা ১৭(ক) এবং মানি লন্ডারিং প্রিভেনশন রুলস, ২০১৯ এর সিডিউল পার্টের টেবিল-১ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন উল্লিখিত তিন জন কর্মকর্তাকে ব্রোকারেজ হাউজটির বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য নিয়োগ দেওয়া হলো। কর্মকর্তারা এই আদেশ জারির তারিখ থেকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন এবং কমিশনের কাছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখির করবেন।
এর আগে গত ২৯ জুলাই এ বিষয়ে জারি করা তদন্তের আদেশটি বাতিল করা হয়।
এনআরবি ব্যাংক সিকিউরিটিজ পিএলসির মাধ্যমে কোনো অবৈধ লেনদেন, অপ্রদর্শিত অর্থের (কালো টাকা) ব্যবহার, অথবা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে লেনদেন হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হবে। শেয়ারহোল্ডার পরিবর্তনের সময় বা নতুন পরিচালনা পর্ষদ সদস্য নিয়োগের সময় সিকিউরিটিজ আইনের কোনো লঙ্ঘন হয়েছে কি-না তা পরীক্ষা করা হবে।
ব্যাংকটির চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বা কোনো পরিচালনা পর্ষদ সদস্য অভ্যন্তরীণ লেনদেন (ইনসাইডার ট্রেডিং), বাজারে কারসাজি (মার্কেট ম্যানিপুলেশন), অথবা ব্যক্তিগত লাভের জন্য অন্যায়ভাবে শেয়ার স্থানান্তরের (আনফেয়ার ট্রান্সফারিং) সঙ্গে জড়িত ছিলেন কি-না তাও পরীক্ষা করে দেখবে। পরিচালনা পর্ষদ বা অন্য কোনো শীর্ষ নির্বাহী নিয়োগের সময় প্রাসঙ্গিক নির্দেশিকাগুলো সম্পূর্ণভাবে পালন করা হয়েছিল কি-না তা যাই করা হবে।
ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ বা ট্রেডিং কার্যকলাপের ওপর কোনো অননুমোদিত নিয়ন্ত্রণ বা হস্তক্ষেপ ছিল কি-না তা পরীক্ষা করা হবে। এছাড়া অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির একজন কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক অভিযোগ ও অনুসন্ধানের ভিত্তিতে কিছু শর্ত সাপেক্ষে বিএসইসি গত ২৯ জুলাই তদন্ত কমিটি গঠন করে একটি আদেশ জারি করে। পরবর্তীতে সেই আদেশ বাতিল করে আরো কিছু শর্ত সংযুক্ত করে নতুন আদেশ জারি করেছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।